বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে সহজ করে তুলছে। আমরা চাই বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহার। আবার বাসগৃহ, বিদ্যালয়, অফিস, কল- কারখানাসহ সকল স্থাপনায় বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং-এ ব্যবহৃত ফিটিংস ও ফিক্সার, সংযোগকারী তার ও সহায়ক উপকরণের নান্দনিক বিন্যাস সৌন্দর্য্য বর্ধন বা অক্ষুন্ন রাখার জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। একটি স্থাপনায় বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এর উপযোগিতা, স্থায়িত্ব, ব্যর ও নিরাপত্তা নির্ভর করে ওয়্যারিং-এ ব্যবহৃত ফিটিংস ও ফিক্সার এর উপর । বৈদ্যুতিক ফিটিংস ও ফিক্সার স্থাপনের কাজগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ জ্ঞান, দক্ষতা এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া। এ অধ্যারে ফিটিংস ও ফিক্সার এর পরিচিতি, প্রকারভেদ ও ইন্সটলেশন নিয়ে আলোচনা করা হলো।
উপর্যুক্ত শিখনফলগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এ অধ্যায়ে আমরা ইন্ডিকেটর, ফিউজ, সুইচ ও সকেটসহ সুইচবোর্ড ফিক্সআপ করব এবং ওয়্যারিং বোর্ডে ব্যাটেন হোল্ডার ও সিলিং রোজ ফিক্সআপ সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ সম্পর্কে জানব ।
বৈদ্যুতিক বাতির হোল্ডারের শেডসহ ধরে রাখার জন্য সমস্ত সরঞ্জাম যেগুলো ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সুবিধা ভোগ করা যায় সেগুলোকে বৈদ্যুতিক ফিটিংস বলে। এটি বৈদ্যুতিক ইন্সটলেশনের অংশ বিশেষ ।
নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিটিংস এর নামের তালিকা দেয়া হলো- এটি
১। ইন্ডিকেটর ল্যাম্প
২। ল্যাম্প হোন্ডার
৩। মেইন সুইচ
৪। সার্কিট ব্রেকার
৫। সিলিং রোজ
৬। সকেট
৭। সকেট আউটলেট
৮। রেগুলেটর
৯। সুইচ
১০। এম সি বি
১১। প্রাগ
১২। ফিউজ
১৩। জাংশন বক্স
১৪। ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড
১৫। সাব-ডিস্ট্রিবিউশন বোড
১৬। সুইচবোর্ড
ফিক্সার হচ্ছে এমন সব হার্ডওয়্যার সামগ্রী যেগুলো দেয়ালের সাথে বৈদ্যুতিক ফিটিংস আটকানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। আবার কিছু কিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও ফিক্সারের অন্তর্ভুক্ত। নিচে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের ফিক্সারের নামের তালিকা দেয়া হলো-
১। কাপলার
২। লক নাট
৩। কানেক্টর
৪। রাওয়াল প্লাগ
৫। পেরেক
৬। হুক
৭। তারকাটা
৮। স্যাডল
৯। বুশ
১০। রিডিউসার
১১। কর্ণার
১২। ক্লিপ
১৩। মেশিন স্কু
১৪। বেড
১৫। স্টপিং প্লাগ
১৬। কট স্কু
১৭। আর্থিং ক্ল্যাম্প
এখন কতিপর ফিটিংস নিয়ে আলোচনা করা হলো-
যখন কোনো ইন্ডিকেটর সুইচ বোর্ডে স্থাপন করা হয় তখন তাকে ইন্ডিকেটরসহ সুইচ বোর্ড বলে। কোনো সুইচ বোর্ডে ইন্ডিকেটর জ্বলতে থাকলে বুঝা যায় যে ঐ বোর্ডে বিদ্যুৎ আছে।
ইলেকট্রিক সুইচ বোর্ডে যে উপাদানটি সবসময় জ্বলে, আমরা যেটার সাহায্যে ইলেকট্রিক সুইচবোর্ডের দিকে তাকালে বুঝতে পারি বিদ্যুৎ আছে কি নাই তার নাম হলো ইন্ডিকেটর। এটি বোর্ডে রেজিস্টরসহ প্যারালালে সংযোগ করা থাকে। এর দুটি দিনের মধ্যে একটি ফেজ ও একটি নিউট্রাল লাইনে সংযোগ থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইন্ডিকেটর ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে নির্দেশ করে। একে ফন্ট সার্কিট ইন্ডিকেটরও বলা হয়। এটি ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ও সুইচবোর্ডে ব্যবহার করা হয়।
এটি সাধারণত: ৫-১০ mA, ১.৫V এর হয়ে থাকে। ইন্ডিকেটর বিভিন্ন প্রকৃতির যেমন: নিয়ন ল্যাম্প, লাইট ইমিটিং ডায়োড (LED) এবং লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD) ল্যাম্প। লাইট ইমিটিং ডায়োড এর ক্ষমতা ৭.৫ mw থেকে ১৫ mw পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোনো সার্কিট বা যন্ত্রপাতির অপারেটিং অবস্থা জানার জন্য এবং সতর্কীকরণ ঘন্টা পাওয়ার জন্য সার্কিট বা যন্ত্রপাতিতে ইন্ডিকেটর সংযোগ করা হয়। এটি ত্রুটিযুক্ত ইলেকট্রিক্যাল সার্কিটকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ ও চিহ্নিত করে। ফলে ত্রুটিযুক্ত সার্কিটকে ভাল অংশ হতে সহজেই আলাদা করা যায়। এতে যন্ত্রপাতির ক্ষয়ক্ষতি কম হয় ও অপচয় রোধ হয়।
সুইচবোর্ডের সাইজ বলতে এর ক্ষেত্রফলকে বোঝায়। সুইচবোর্ডে ব্যবহৃত আউটলেটের সংখ্যার ভিত্তিতে সুইচ বোর্ডের সাইজ নির্ধারণ করা হয়। সুইচবোর্ড সাধারণত শক্ত প্লাস্টিক বা এবোনাইট দিয়ে তৈরি হয়। সুইচ, সকেট, ফ্যান, রেগুলেটর প্রভৃতি স্থাপন করার জন্য সুইচবোর্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্থাপনযোগ্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সাইজের সুইচবোর্ড পাওয়া যায়। সুইচবোর্ডে সুইচ, সকেট, ফিউজ, ফ্যান রেগুলেটর ইত্যাদি বসানোর জন্য খাঁজ কাটা থাকে। খাঁজ কাটা ছাড়াও বিভিন্ন মাপের বোর্ড পাওয়া যায়। নিচের চিত্রে সুইচসহ ১০০ মি. মি. x ১৫০ মি. মি. (৪ ইঞ্চি ২৬ ইঞ্চি) সাইজের একটি সুইচ বোর্ড দেখানো হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের জন্য নিম্নলিখিত পরিমাপের সুইচবোর্ড বাজারে পাওয়া যায়-
৭৫ মি. মি.×৭৫ মি:মি: (৩"x৩"),
১০০ মি. মি.×১৫০ মি. মি. (4"x6"),
১২৫ মি. মি. x ২০০ মি: মি: (৫" x ৮"),
২০০ মি. মি. x ২৫০ মি. মি. (৮"x১০")
সুইচবোর্ড স্থাপনের ধাপসমূহ-
১। নিৰ্দিষ্ট সুইচবোর্ড, সুইচ ও টুলস বাছাই করতে হবে।
২। সুইচবোর্ডে সুইচ স্থাপনের জন্য মাপমত কাটতে হবে।
৩। সুইচের কস্তার বা ঢাকনা খুলতে হবে।
৪। সুইচের অবস্থা চিহ্নিত করে ভারের জন্য বোর্ডে ছিদ্র করতে হবে।
৫। প্রয়োজনীয় দৈর্ঘ্যের ইনসুলেশন খুলে ইনসুলেশন যুক্ত অংশটি পরিষ্কার করতে হবে।
৬। ছিদ্র দিয়ে তার ঢুকানোর জন্য টার্মিনাল পোস্টে সংযোগকারী স্ক্রু গুলো ঢিলা করতে হবে।
৭। টার্মিনাল পোস্টে তার সম্পূর্ণভাবে লাগিয়ে ড্র গুলো শক্তভাবে আটকাতে হবে।
হোন্ডার এমন একটি সরঞ্জাম যা একটি বাতিকে আটকিয়ে বা ধরে রাখে। হোল্ডার এর মধ্যে ইলেক্ট্রিক বাতি ঢুকিয়ে বা স্থাপন করে বাতি জ্বালানো হয়।
বৈদ্যুতিক তারের সাথে বাতি লাগানোর জন্য যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয় তাকে হোল্ডার বলে। বাল্ব আটকানোর জন্য ল্যাম্প হোল্ডার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফিটিংস। আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকারের ল্যাম্প হোল্ডার পাওয়া যায় ।
গঠন ও ব্যবহার এর উপর নির্ভর করে হোল্ডার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ব্যাটেন হোল্ডার, পেনডেন্ট হোল্ডার, ব্রাকেট হোল্ডার, ফ্লোরোসেন্ট ল্যাম্প হোল্ডার, স্যুইভেল হোল্ডার, পুশ-পুল হোল্ডার, কী সুইচ হোল্ডার ইত্যাদি।
ব্যাটেন হোল্ডার: ব্যাটেন হোল্ডার সাধারণত ব্যাটেন ওয়্যারিংয়ে বা কাঠের বোর্ডে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ছাদে বা দেয়ালে লাগানোর জন্য এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
পেনডেন্ট হোল্ডার: ঝুলন্ত ল্যাম্পকে জ্বালানোর জন্য পেনডেন্ট হোল্ডার ব্যবহার করা হয়। ছাদে আটকানো সিলিং রোজ হতে ফ্লেক্সিবল তারের মাধ্যমে সংযোগ দেয়ার জন্য পেনডেন্ট হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
ব্রাকেট হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডারের এক প্রান্তে প্যাচ কাটা একটি ক্যাপ থাকে। ক্যাপের সাহায্যে পেঁচিয়ে ব্রাকেটের এক প্রান্তে হোল্ডার লাগানো হয়। ব্র্যাকেটের অন্য প্রাপ্ত দেয়ালে লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। ব্র্যাকেটসহ এটি দেয়ালে ব্যবহার করা হয়।
কী সুইচ হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডার সাধারণত টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়। ল্যাম্প জ্বালানো এবং নিভানোর জন্য এ হোল্ডারের গায়ে সুইচ এর ব্যবস্থা থাকে বিধায় এরূপ নামকরণ হয়েছে। সেজন্য খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায় এমন জায়গায় এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
পুশ-পুল হোল্ডার: এ হোল্ডার কী সুইচ হোল্ডারের ন্যায় টেবিল ল্যাম্পে ব্যবহার করা হয়। হোল্ডারের গায়ে একটি সুইচিং ব্যবস্থা আছে, যার সাহায্যে বাতি জ্বালানো ও নিভানো হয়। খুব সহজে নাগালে পাওয়া যায় এমন জায়গায় ল্যাম্পকে জ্বালানো এবং নিভানোর জন্য এ হোল্ডার ব্যবহার করা হয় ।
স্যুইভেল হোল্ডার: বিভিন্ন দিকে আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দোকানে, প্রদর্শনীতে এবং জনসমাগম স্থানে ব্যবহৃত বাতিতে এ হোল্ডার ব্যবহৃত হয়।
ক্লোরোসেন্ট ল্যাম্প হোল্ডার: এ ধরনের হোল্ডার ফ্লোরোসেন্ট টিউব লাইট জ্বালানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এটা টিউব লাইট সংযোগে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং দামেও স
বেয়নেট ক্যাপ হোল্ডার: সাধারণত: ২০০ ওয়াট পর্যন্ত বাতির জন্য বেয়নেট ক্যাপ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাড়ি ও অফিসে বাতি জ্বালানোর জন্য এ ধরনের হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
ফু ক্যাপ হোল্ডার: তুলনামূলকভাবে অধিক ক্ষমতা (২০০ থেকে ১০০০ ওয়াট) সম্পন্ন বাতির জন্য ক্যাপ হোল্ডার ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে বিভিন্ন গঠন ও আকারের সিলিং রোজ পাওয়া যায়। সিলিং রোজ ব্যবহারে ওয়্যারিং এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
সাধারণত বুলক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যেমন: বাতি, পাখা, টিউব লাইট ইত্যাদিতে সরবরাহ প্রদানের জন্য খরের ছাদে বা সিলিং এ যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয়, তাকে সিলিং রোজ বলা হয়। ২৫০ ভোল্টের বেশি বৈদ্যুতিক সার্কিটে সিলিং রোজ ব্যবহার করা হয় না। সিলিং রোজের ঢাকনার ভিতরে তারের গিট দেয়া হয় যেন সংযোগ স্থায়ী হয় বা খুলে না যায়। নিচের চিত্রে সিপিং রোজ দেখানো হলো।
ফ্লেক্সিবল তার দিয়ে সিলিংরোজ এর মাধ্যমে ঝুলন্ত বাতি, সিলিং ফ্যান, ফ্লোরেসসেন্ট বাতি ইত্যাদি সংযোগ করতে হয়।
১.৪ সফেট (Socket) : সকেটের মাধ্যমে সহজেই বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়। সাধারণত কম অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে টু-পিন সকেট এবং বেশি অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে থ্রি-পিন সকেট সংযোগ করা হয়। আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির সকেট পাওয়া যায়।
সকেট হচ্ছে বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং লাইনে ব্যবহৃত এমন ধরনের সরঞ্জাম যার মাধ্যমে সর্বদা বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হয়। যেমন— টেবিল ল্যাম্প, টেবিল ফ্যান, টিভি, রেডিও, ক্যাসেট রেকর্ড প্লেয়ার, ডিভিডি ইত্যাদির ক্ষেত্রে টু-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক ইসি, ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রিল মেশিন ও ইলেকট্রিক হ্যাঙ ড্রাইভার ইত্যাদির ক্ষেত্রে আর্থ টার্মিনালসহ টু-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া যে সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতব বঙি থাকে এবং এটি বিদ্যুতায়িত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি সেই সকল ক্ষেত্রে থ্রি-পিন সকেট ব্যবহার করা হয়। যেমন- রেফ্রিজারেটর, রুম হিটার, টেবিল হিটার, হট-প্লেট, বৈদ্যুতিক ওভেন ইত্যাদি।
সকেট সাধারণত তিন প্রকার। যথা-
১) টু-পিন সকেট, ৫A (সুইচসহ বা সুইচ বিহীন)
২) থ্রি-পিন সকেট, ১৫A (সুইচসহ বা সুইচ বিধী)
৩) পাঁচ-পিন সকেট, ১৫A
এ ছাড়া আজকাল উপরে উল্লিখিত সবগুলো সকেটই সুইচের সাথে একত্রে পাওয়া যায় যা কথাইড সুইচ-সকেট নামে পরিচিত। একাধিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এক স্থান হতে চালানোর জন্য বর্তমানে এক্সটেনশন কর্ডযুক্ত মাল্টি- সকেট পাওয়া যায়। সামরিকভাবে বিদ্যুৎ এর লাইন বর্ধিত করার জন্য এ ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়।
টু-পিন সকেট হলো এমন একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম যার মাধ্যমে কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া যায়। এটি সুইচবোর্ড বা এক্সটেনশন কর্ডে স্থাপন করা হয়। সাধারণত টু-পিন সকেট ৫ থেকে ১০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত কারেন্ট বহন করতে পারে। আমাদের দেশের জন্য সকেটে গোলাকার পিন ব্যবস্থাসহ সার্টার যুক্ত থাকে। নিরাপত্তা মূলক সার্টার থাকাতে কোনো কিছু প্রবেশ করতে পারে না। টু-পিন সকেট এর সাইজ বিভিন্ন ধরনের হয়। টু-পিনে সকেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অবশ্যই সুইচ সংযোগ করতে হয় এবং রক্ষণযন্ত্র হিসেবে কিউজ অথবা সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা হয়।
সফেটের ভিতর কন্টাক্ট লুজ হলে স্পার্ক সৃষ্টি হবে। ফলে সকেট গরম হয়ে এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট, এমন কি আগুন লেগে যেতে পারে। দুর্ঘটনা এড়াতে ভালো মানের সকেট ব্যবহার করা উচিত। টু-পিন প্রাণ এর মাধ্যমে লোড সংযোগ দেয়ার পর সকেট গরম হলে কিংবা স্পার্ক বা হিসহিস আওয়াজ করলে সকেট পরিবর্তন করতে হবে।
বর্তমানে অনেক বৈদ্যুতিক লোডে আর্থসহ টু-পিন এর প্লাগ দেয়া থাকে, যার কারণে আর্থসহ টু-পিন সকেট যুক্ত করতে হয়, এতে বৈদ্যুতিক শক এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সাধারণত কম অ্যাম্পিয়ারের ক্ষেত্রে যেমন ৫ অ্যাম্পিয়ার এর সকেট চার্জার বাতি চার্জ করতে, টেবিল ল্যাম্পে, রেডিও, ইলেকট্রনিক ঘড়ি, টেবিল ফ্যান, মোবাইল ফোন ইত্যাদি চালাতে এবং ১৫ অ্যাম্পিয়ার সকেট টেলিভিশন, হিটার, ইস্ত্রি, ফ্রিজ, ওভেন ইত্যদি চালাতে পাওয়ার সার্কিটে থ্রি-পিন সকেট ব্যবহৃত হয়। মাল্টি সকেট বা এক্সটেনশন কর্ড বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে লোড সংযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। খাতায় লিখে শ্রেণি শিক্ষককে দেখাও।
বর্তমানে বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির সুইচ পাওয়া যায়। সুইচ ব্যবহারে লোডে সহজে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সুইচ হচ্ছে অতি জরুরি একটি বৈদ্যুতিক ফিটিংস। এটি সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। বৈদ্যুতিক সার্কিট বা বর্তনীতে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু (ON) ও বন্ধ (OFF) করতে যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয় তাকে সুইচ বলে। সুইচ ছাড়া বর্তনীতে কারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সুইচ বোর্ড সাধারণত মেঝ হতে ১.৫ মিটার উপরে স্থাপন করা হয়।
সুইচ বৈদ্যুতিক সার্কিটে নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। সাধারণত: সুইচে সব সময় ফেজে সংযোগ করতে হয় । এক্ষেত্রে যদি সুইচ ফেজ তারের সাথে সংযুক্ত থাকে তবে সুইচ অফ করলে সুইচের পরে আর কোন ভোল্টেজ থাকে না। ফলে মেরামত কাজ নিরাপদে করা সম্ভব হয়। যদি ভুল করে সুইচ ফেজ তারের পরিবর্তে নিউট্রাল তারে সংযোগ করা হয় তবে সেক্ষেত্রে সুইচ অফ করলে বাতি নিভে যাবে, সুইচ অন করলে বাতি জলবে। কিন্তু নিউট্রাল তারে সুইচ সংযোগ করা হলে সুইচ অফ করলে বাতি নিভে যাবে কিন্তু বাতির হোল্ডারের অংশে ভোল্টেজ থাকবে । তবে সেক্ষেত্রে একজন ইলেকট্রিশিয়ান সুইচ বন্ধ করে সার্কিটে বিদ্যুৎ সাপ্লাই নেই মনে করে মেরামতের কাজ করতে গেলে সে বৈদ্যুতিক শক পাবে, যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যা জীবনের জন্য নিরাপদ নয়।
আজকাল বিভিন্ন গঠন ও আকৃতির প্লাগ পাওয়া যায়। প্লাগ ব্যবহারের মাধ্যমে সকেট থেকে লোডে সহজেই সংযোগ দেয়া যায়।
সাধারণত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার জন্য এর সাথে সংযুক্ত তার বা কর্ডের টার্মিনালে যে ফিটিংস ব্যবহার করা হয়, তাকে প্লাগ বলে। সকেটের মাধ্যমে লোডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্লাগ ব্যবহার করা হয় । নির্দিষ্ট ধরনের সকেটের সাথে গোল পিন, চ্যাপ্টা পিন এর প্লাগ ব্যবহার করা হয়।
প্লাগ দুই প্রকার। যেমন : টু-পিন প্লাগ (৫ অ্যাম্পিয়ার), থ্রি-পিন প্লাগ (১৫ অ্যাম্পিয়ার)
টেবিল ল্যাম্প, টেবিল ফ্যান, টিভি, রেডিও, ক্যাসেট, রেকর্ড প্লেয়ার, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রিল মেশিন ও ইলেকট্রিক হ্যান্ড গ্রাইন্ডার ইত্যাদিতে টু-পিন প্রাণ সংযুক্ত থাকে। আর ছোট ছোট পিলার ছিল, রেফ্রিজারেটর, রুম হিটার, টেবিল হিটার, হট-প্লেট, বৈদ্যুতিক ওভেন, ইলেকট্রিক সুইং মেশিন, সিংগেল ফেজ প্রাইভিং মেশিন ইত্যাদিতে থ্রি-পিন প্লাগ লাগানো থাকে।
আরও দেখুন...